পিরিয়ডের সময় যে খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত

পিরিয়ডের সময় কি খাবার খেলে কি হয় এবং কোন খাবারগুলো খাওয়া উচিত নয় খেলে কি ক্ষতি হয় সকলের জানা উচিত| এই আর্টিকেলে আপনারা পিরিয়ডের সময় কি খাবার খেলে কি সমস্যা হয় এবং কোন খাবার গুলো খাওয়া উচিত এই বিষয়গুলো জানতে পারবেন।
পিরিয়ডের সময় যে খাবারগুলো
পিরিয়ডের সময় অনেক খাবার আছে যেগুলো খাওয়া উচিত না খেলে অনেক ধরনের সমস্যা হয় আসুন তাহলে সে খাবার গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন। 

ভূমিকা

মেয়েদের জীবনের পিরিয়ড হওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস| তবে এই পিরিয়ডের সময়ে মেয়েদের কিছু জিনিস খাওয়া থেকে এরই তুলতে হবে| না হলে শরীরে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিবে| এই সমস্যাগুলো পরবর্তীতে বিশাল আকৃতি ধারণ করবে এজন্য সাবধানতা অবলম্বন করা ভালো| এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জেনে নিন পিরিয়ডের সময় কোন খাবার গুলো এড়িয়ে চলবেন।

পিরিয়ডের সময় কি কি খাবার খাওয়া উচিত নয়

এখনো অনেকেই আছে যারা আপনারা জানেন না যে পিরিয়ডের সময় কোন খাবারগুলো খাওয়া উচিত নয় কোন খাবার খেলে কি ধরনের সমস্যা হয়। তবে এই বিষয়গুলো সকলেরই জেনে রাখা উচিত কারণ পিরিয়ডের সময় অনেক খাবার আছে যেগুলো খাওয়ার ফলে মেয়েদের অনেক ধরনের সমস্যা হয় আসুন তাহলে সেই খাবারগুলো সম্পর্কে জেনে নিন।

পিরিয়ডের সময় শসা খেলে কি হয়

প্রতি মাসে মাসিক বা পিরিয়ড শুরু হওয়ার মাধ্যমে মেয়েদের শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত হয়। এই সময় কিছু খাবার থেকে বিরত থাকা উচিত তার মধ্যে শসা অন্যতম। শসা যদিও আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী শরীরে অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সাহায্য করে কিন্তু পিরিয়ডের সময় এই শসা হতে পারে আমাদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

পিরিয়ডের সময় শসা খাবেন না কারণ শসার মধ্যে থাকা রস পিরিয়ডের রক্তকে জরায়ুর প্রাচীরে আটকে দিতে পারে। যার ফলে আপনার বন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পিরিয়ডের সময় শসা খেলে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যার হাওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। 

আসলে শসাতে উপস্থিত কিছু উপাদান এ সময় শরীরের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে। যে কারণে পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই অবশ্যই পিরিয়ডের সময় শসা খাওয়া থেকে বিরত থাকবো।

পিরিয়ডের সময় টক খেলে কি হয়

আমাদের দেশে নারীদের মাঝে সবচাইতে প্রচলিত ধারণা হলো পিরিয়ডের সময় টক খেলে ব্লিডিং বাড়ে।  কিন্তু আসলেই কি তাই ? এ কথা পুরোপুরি সত্য নয় বরং সত্যটি হচ্ছে পিরিয়ডের সময় কিছু বিশেষ টক খাবার খেলে রক্তপাতের পরিমাণ বাড়তে পারে, কিছু খাবারে আবার কোন সমস্যা হয় না।পিরিয়ডের সময় টক খাবার খেলে রক্তপাত বা ব্যথা বাড়ে না।

 টক খাবারের সাথে পিরিয়ডের কোন সম্পর্ক নেই। কিন্তু হ্যাঁ কিছু বিশেষ ধরনের টক খাবার খেলে ব্যথা ও রক্তপাত দুটোই বাড়বে। সে বিশেষ টক খাবার হচ্ছে লবণযুক্ত টক খাবার যেমন আচার ।আমাদের দেশে বরই বা অন্য যে কোন টক খাবার খাওয়ার সাথে লবন খেয়ে থাকি। এই লবণটি মূলত ক্ষতির কারণ এবং এর কারনেই ব্লিডিং বাড়ে।

টক জাতীয়  খাবারের কারণে নয় অতিরিক্ত লবণ দেওয়া প্রসেসড এবং ক্যান্যড যে কোন খাবারপিরিয়ডের সময় আপনার জন্য ক্ষতিকর। কারণ এগুলোতে থাকে উচ্চমাত্রার সোডিয়াম যার রক্তপাত বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এছাড়াও নোনতা বিস্কিট , লবণ দেওয়া চিপস ও বাড়তি লবণ দেওয়া যে কোনো খাবারইএ সময় এড়ানো ভালো।

পিরিয়ডের সময় আপনি যে কোন টক ফল খেতে পারেন তবে অবশ্যই বাড়তি লবণ ছাড়া। টক দইয়ের মত প্রাকৃতিক খাবার খেতে পারেন অনাসয়ে। তবে আচার বা ফ্যাক্টরিতে তৈরি হয় এমন কোন টক খাবার খাবেন না।

পিরিয়ডের সময় দুধ  খেলে কি হয়

পিরিয়ডের সময় খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে দুধ। অবাক হচ্ছ ভাবছো এই সময়ে দুধের মত পুষ্টিকর খাবার কেন বাদ দিতে হবে? পিরিয়ডের সময় দুধ বা দুধ দিয়ে তৈরি যে কোন খাবার শরীরের জন্য ক্ষতিকর। মাসিকের সময় দুধ দিয়ে তৈরি দই বা দুধের যেকোনো তৈরি খাবার খেলে শরীরে থাকা বিশেষ কিছু হরমোন অতিমাত্রায় ক্ষয় হয়।

ফলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতির  সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া দুধে এক প্রকার এসিড রয়েছে পিরিয়ড এর সময়ে তলপেটে মাত্রাতিরিক্ত ব্যথার সৃষ্টি করতে পারে দুধে থাকা এই এসিড। তাই বিশেষজ্ঞরা পিরিয়ড চলাকালীন সময় দুধ বা দুধ জাতীয় সকল ধরনের খাবার এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

পিরিয়ডের সময় ফ্রিজের ঠান্ডা পানি খেলে কি হয়

পিরিয়ডের সময় ফ্রিজে ঠান্ডা পানি বা খাবার খাওয়া যাবে না। ফ্রিজে রাখা ঠান্ডা খাবার ফল কখনোই পিরিয়ড চলাকালীন সময় খাওয়া যাবে না। পিরিয়ডের সময় ঠান্ডা পানি বা ঠান্ডা খাবার খেলেসেটা পিরিয়ডের ব্লাড জরায়ুর প্রাচীরে জমাট বাধা দিতে পারে যা একজন নারীর জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।

পিরিয়ডের সময় ঠান্ডা পানি খাওয়ার ফলে এই সময় দূষিত রক্ত বের হয়ে যেতে পারে না। যার ফলে শরীরে জন্ম দিতে পারেন নানা ধরনের জটিল ও কঠিন রোগের হতে পারে কোমর ও পিঠে প্রচন্ড ব্যাথা। ঠান্ডা পানি নিয়মিত মাসিক কে করে দিতে পারে অনিয়মিত। ঠান্ডা পানি বা ঠান্ডা খাবার খাওয়ার পরে যদি রক্ত  জমাট বাঁধে তাহলে সেই জমে থাকা সে রক্তের টুকরো স্পট জন্ম নিতে পারে ক্যান্সার।

পিরিয়ডের সময় কি কি ফল খাওয়া উচিত নয়

আমরা সকলেই জানি পিরিয়ডের সময় মেয়েদেরকে একটু বেশি সতর্ক থাকতে হয় এবং সেই সাথে খাবার-দাবারের ক্ষেত্রে কিছু বিধি নিষেধ রয়েছে যা সকল মেয়েদের জানা ও মানা দরকার|পিরিয়ডের সময় যেমন কিছু খাবার খাওয়া জরুরী আবার তেমনি কিছু খাবার খাওয়ার নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সে সকল নিষিদ্ধ খাবারের মধ্যেও রয়েছে কিছু ফল যা পিরিয়ডের সময় খাওয়া যাবে না।

যে ফলগুলো পিরিয়ডের সময় খাওয়া যাবে না সেগুলো হলো

  • শসা [ পিরিয়ড চলাকালীন সময় খেলে অতিরিক্ত রক্তপাত ও জরায়ুতে রক্ত জমাট বাঁধার মতো ঘটনা ঘটতে পারে এই জন্য শসা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।]
  • নারিকেল [ পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে নারিকেল  খাওয়া যাবে না যা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর জরায়ুর উপর অনেক খারাপ হওয়া ফেলে ভুলেও নারিকেল খাবেন না কিন্তু নারিকেলের পানি খাওয়া যাবে।]
  • কামরাঙ্গা [ কামরাঙ্গা ফলটি পিরিয়ডের সময় খাওয়া অনেক ক্ষতি কর। কামরাঙ্গা নারীদের জরায়ুর উপর বেশ খারাপ প্রভাব ফেলে কামরাঙ্গাতে রয়েছে অক্সালিড এসিড এ জন্য পিরিয়ডের সময় কামরাঙ্গা খেলে জরায়ুতে ইনফেকশন হতে পারে তাই এ সময় একদম কামরাঙ্গা ]

পিরিয়ডের সময় কি কি খাওয়া উচিত

পিরিয়ডের দিনগুলোতে রক্তক্ষরণের ফলে শরীরে পুষ্টির অভাব দেখা দেয়। এ সময় আয়রনের মাত্রাতিরিক্ত ক্ষরণের পরে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই এই সময় শরীরের জন্য প্রত্যেকটি নারীর যত্নবান হতে হবে। এজন্য শরীরকে সুস্থ রাখতে খাবারের বেলায় হতে হবে অনেক সচেতন জানতে হবে যে পিরিয়ডের সময় কি কি খাবার খাওয়া উচিত যা শরীরকে সুস্থ ও সুন্দর রাখবে।

পানি 

পিরিয়ডকালীন খাদ্য তালিকায় প্রথমে পানি রাখবেন। এ সময় পানি শরীরের জন্য অনেক দরকারি। কারণ পিরিয়ডের ব্লাডের সাথে প্রচুর পরিমাণ পানি বের হয়ে যায়। যার ফলে শরীরে পানি স্বল্পতার ফলে শরীর দুর্বল হয়ে যায়। এছাড়াও মাথা ব্যথা, পেট ব্যথা, কোমর ব্যথা ও বমি অভাব ইত্যাদি পানি স্বল্পতার কারণে দেখা দেয়।

তাই এই সময় অবশ্যই দিনে 10 থেকে 12 গ্লাস পানি পান করতে হবে। তবে হ্যাঁ মনে রাখবেন কোন ভাবে এই সময় ফ্রিজে ঠান্ডা পানি খাওয়া যাবে না। নরমাল পানি খাবেন আর সব থেকে ভালো হয় যদি হালকা গরম পানি পান করেন।

প্রোটিন জাতীয় খাবার

পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে অবশ্যই প্রোটিন জাতীয় খাবারের উপর গুরুত্ব দিবেন। কারণ এই সময় খাবার শরীরের দ্রুত শক্তি যোগাতে সাহায্য করে। প্রোটিন জাতীয় খাবারের মধ্যেও খেতে পারেন আপনারা 

  • ডাল
  • একটি ডিম
  • সামুদ্রিক মাছ ও বড় মাছ
  • মুরগির মাংস
  • কবুতরের মাংস
  • গরু ও খাসির মাংস ও কলিজায় ইত্যাদি

এ খাবারগুলো পিরিয়ডের সময় শরীরে পুষ্টি যোগাতে সাহায্য করে। তবে যাদের ওজন অনেক বেশি তারা প্রোটিন জাতীয় খাবার পরিমাণ একটু কম খাবেন।

পিরিয়ডের সময় ডিম খাবেন 

পিরিয়ডের সময় একটি করে ডিম খাওয়া বাধ্যতামূলক। কারন ডিম এই সময় তাৎক্ষণিক শক্তি যোগায়। ডিমে থাকা পুষ্টিগুণ শরীরে আয়রন সহ ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করেন।

পিরিয়ডের সময় কি কি শাকসবজি খাবেন

পিরিয়ডের সময় খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে সবুজ শাকসবজি শরীরের সুস্থতা বজায় রাখার জন্য। শাক সবজির মধ্যে আপনারা খেতে পারেন যেমন
  • ফুলকপি
  • লাউ
  • মূলা
  • শিম
  • মিষ্টি কুমড়া
  • বেগুন
  • পেঁপে
  • কাঁচা কলা
  • বরবটি
  • কাঁকরোল
  • কচু শাক
  • পালং শাক
  • লাল শাক
  • পুঁইশাক
  • সজনে ডাঁটা
এই শাকসবজি গুলোতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন ,ভিটামিন ও খনিজ রয়েছে। তাছাড়া পিরিয়ডের সময় শরীর থেকে ক্ষয় হয়ে যাওয়া আইরন ও ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করতে সহায়তা করে। এছাড়া ওই খাদ্যগুলো পিরিয়ডের সময় পেটে ব্যথা, কোমর ব্যাথা ও পেশি ব্যথা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

পরিশেষ

এখানে আপনারা পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে কোন খাবারগুলো এড়িয়ে চলবেন এবং কোন খাবারগুলো খাবেন সেগুলো সম্পর্কে বলা রয়েছে। আপনার অবশ্যই পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে এই সতর্কতা গুলো অবলম্বন করবেন যা আপনার শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী উপকারী|


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪